কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

আপনি একটি হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে চাইছেন, তাই না? চিন্তা করবেন না, আমি আপনাকে এটি সহজভাবে করার উপায় বলছি। প্রথমেই আপনাকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে “অনলাইন ভোটার আইডি ডাউনলোড” বা এরকম কিছু একটা অপশন পাবেন। এই অপশনটি খুঁজে পেতে আপনার একটু সময় লাগতে পারে, কিন্তু পেয়ে গেলে আপনি সহজেই আপনার ভোটার আইডি ডাউনলোড করতে পারবেন। এছাড়াও, যদি আপনি আপনার ভোটার আইডি নম্বর না জানেন, তাহলে ওয়েবসাইটে কিছু তথ্য দিতে হবে যেমন আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ ইত্যাদি।

একবার আমি আমার ভোটার আইডি হারিয়ে ফেলেছিলাম এবং তখনই প্রথমবার অনলাইনে ডাউনলোড করেছিলাম। আমি ভাবছিলাম এটা হয়তো খুব জটিল হবে, কিন্তু সত্যি বলতে প্রক্রিয়াটা একদম সোজা। আমি ঐ সময় আমার বন্ধু রবিকে ফোন করেছিলাম এবং সে আমাকে বলেছিল, “আরেফিন, তুই একবার অনলাইনে চেষ্টা করে দেখ।” আমি সেই পরামর্শটা মেনে ওয়েবসাইটে গিয়ে আমার সমস্ত তথ্য দিলাম এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমার নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে গেলাম। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটটা খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি, তাই আপনি খুব সহজেই আপনার হারানো ভোটার আইডি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

আপনি আসলে পুরো প্রক্রিয়াটা জানতে চাইলে আমার পরামর্শ থাকবে যে আপনি পুরো নিবন্ধটি পড়ে ফেলুন। সেখানে আরো বিস্তারিত তথ্য এবং স্টেপ বাই স্টেপ গাইড আছে যা আপনাকে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে। আশা করি, এই ছোট্ট নির্দেশনা আপনার উপকারে আসবে। তো, দেরি না করে এখনই ওয়েবসাইটে যান এবং আপনার হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিন!

হারানো ভোটার আইডি কার্ড পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া

ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার করা বেশ সহজ। প্রথমেই, নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এই জিডি কপিটি পরে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন করার সময় প্রয়োজন হবে।

জিডি করার সময় হারানোর তারিখ, স্থান ও পরিস্থিতি সঠিকভাবে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ। এরপর, অনলাইনে আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে।

অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর ধাপসমূহ

অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যু করতে হলে, প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে (www.nidw.gov.bd) প্রবেশ করতে হবে। এরপর, ‘NID সেবা’ মেন্যু থেকে ‘হারানো বা নষ্ট হওয়া NID কার্ড পুনরুদ্ধার’ অপশন নির্বাচন করতে হবে।

তাহলে একটি ফর্ম প্রদর্শিত হবে যেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে। তথ্য পূরণের পর একটি OTP কোড মোবাইলে পাঠানো হবে, যা দিয়ে আবেদনটি সম্পন্ন করতে হবে।

জিডি কপি আপলোড করে আইডি কার্ড পুনরায় পাওয়া

অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর জন্য আবেদন করার সময়, থানায় করা জিডি কপিটি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

জিডি কপি আপলোড না করা হলে আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হবে না। জিডি কপির সাথে নিজের একটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। এরপর, আবেদনটি সাবমিট করলে একটি রেফারেন্স নম্বর পাওয়া যাবে, যা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে।

২০১৯ সালের পর রেজিস্ট্রেশন করা ভোটারদের জন্য নির্দেশনা

যারা ২০১৯ সালের পর ভোটার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাদের জন্য কিছু বিশেষ নির্দেশনা আছে। এই ভোটারদের জন্য অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা সহজতর করা হয়েছে।

অনলাইনে আবেদন করার সময়, তাদের নিজের পরিচয়পত্রের কপি এবং একটি সাম্প্রতিক ছবি আপলোড করতে হবে। এছাড়াও, তাদের জন্য একটি বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর প্রদান করা হয়েছে, যেখানে তারা যেকোনো সমস্যার সমাধান পেতে পারে।

পুরাতন ভোটারদের জন্য রিইস্যু আবেদন প্রক্রিয়া

পুরাতন ভোটারদের জন্য রিইস্যু আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। তাদেরকে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।

এই ফর্মটি পূরণ করে সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে। ফর্মটি জমা দেওয়ার পর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের নতুন পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে।

রিইস্যুর আবেদন ফি এবং ফি পরিশোধ পদ্ধতি

রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হলে একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হয়।

এই ফি নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে। জমা দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে একটি রসিদ পাওয়া যাবে, যা অনলাইন আবেদন করার সময় আপলোড করতে হবে। এছাড়াও, অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমেও এই ফি প্রদান করা যায়।

অনলাইন আবেদন অনুমোদনের পর করণীয়

অনলাইন আবেদন অনুমোদিত হলে, আবেদনকারীকে একটি SMS বা ইমেইল মাধ্যমে জানানো হবে।

এরপর, আবেদনকারীকে তার নিকটস্থ নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। পরিচয়পত্র সংগ্রহের সময় অবশ্যই রেফারেন্স নম্বর এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। এই প্রক্রিয়াগুলি সম্পন্ন করে সহজেই হারানো ভোটার আইডি কার্ড পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

ধাপ বিবরণ
ধাপ ১ আপনার নিকটস্থ থানায় একটি লিখিত জিডির আবেদন জমা দিতে হবে। এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে জিডির আবেদন করতে পারবেন। যথাযথভাবে জিডি গ্রহণ হলে, জিডি গ্রহণকারী পুলিশ অফিসারের নাম ও তার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে রাখুন। পরবর্তীতে অনলাইনে রিইস্যুর আবেদন করতে এগুলো প্রয়োজন হবে।
ধাপ ২ সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা শেষে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার (NID Wing) ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। যদি পূর্বে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে এনআইডি নম্বর ও পার্সওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করুন। পাসওয়ার্ড হারিয়ে ফেললে বা ভুলে গেলে পুনরায় রিসেট করতে পারেন।
ধাপ ৩ রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনকারীর ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে NID Wing ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারবেন। যদি পূর্ব থেকে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে এই লিংক থেকে NID Wing সম্পন্ন করুন। লগইন সম্পূর্ণ হলে রিইস্যু বাটনে ক্লিক করুন। রিইস্যু অপশনে যাওয়ার পর একটি জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদন ফরম পাবেন। এই ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট করুন। ফরমে জিডির তথ্য পূরণ করুন এবং পুনরায় তথ্যগুলো যাচাই করে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন। এরপরে রিইস্যুর আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে। সাধারণ ৩৪৫ টাকা ভ্যাট সহ এবং জরুরী ৫৭৫ টাকা ভ্যাট সহ আবেদন ফি বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।
ধাপ ৪ হারানো জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদনটি অনুমোদিত হলেই NID Wing ওয়েবসাইটে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। আবেদন Approve হবার পরে আপনার মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। যতদ্রুত সম্ভব NID Wing ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে নিবেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে ডাউনলোড করতে পারবেন না। পুনরায় আপনাকে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হতে পারে।

Read also: যারা স্মার্ট কার্ড পাননি, জেনে নিন কখন ও কিভাবে পাবেন

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরঃ

হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে কি করতে হবে?

হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর অনলাইন আবেদন করার সময় কোন কাগজপত্র জমা দিতে হবে?

জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর অনলাইন আবেদন করার সময় থানায় করা জিডির কপি জমা দিতে হবে।

২০১৯ সালের পর রেজিস্ট্রেশন করা ভোটাররা কিভাবে আইডি কার্ড পুনরায় প্রিন্ট করতে পারবেন?

২০১৯ সালের পর রেজিস্ট্রেশন করা ভোটাররা অনলাইনে থাকা NID PDF ফাইলটি পুনরায় প্রিন্ট করে জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

কত দিনের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হতে পারে?

জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হতে ৭ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

জিডির কপি আপলোড করার পর জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে কত টাকা ফি দিতে হবে?

জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য সাধারণ রিইস্যুর আবেদন ফি হলো ৩৪৫ টাকা ভ্যাট সহ এবং জরুরী রিইস্যুর আবেদন ফি হলো ৫৭৫ টাকা ভ্যাট সহ।

অনলাইনে রিইস্যুর আবেদন করতে হলে প্রথমে কোন ধাপটি সম্পন্ন করতে হবে?

অনলাইনে রিইস্যুর আবেদন করতে হলে প্রথমে নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে।

পূর্বে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে কিভাবে লগ-ইন করতে হবে?

পূর্বে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে এনআইডি নম্বর ও পার্সওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করতে হবে।

রিইস্যুর আবেদন ফরম পূরণ করার সময় কোন তথ্য গুলো পূরণ করতে হবে?

রিইস্যুর আবেদন ফরম পূরণ করার সময় জিডির তথ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে।

রিইস্যুর আবেদন ফি কিভাবে পরিশোধ করতে পারবেন?

রিইস্যুর আবেদন ফি বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।

রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হওয়ার পরে কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করবেন?

রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হওয়ার পরে NID Wing ওয়েবসাইটে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হওয়ার পর কি মাধ্যমে জানানো হবে?

জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন অনুমোদন হওয়ার পর মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।

২০১৯ সালের পূর্বের ভোটারদের জন্য কি বিশেষ কোন প্রক্রিয়া আছে?

২০১৯ সালের পূর্বের ভোটারদের পুনরায় জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য ২৩০ টাকা ফি দিয়ে রিইস্যুর আবেদন করতে হবে।

হারানো জাতীয় পরিচয় পত্রের জিডির কপি আপলোড করার সময় কোন বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে?

হারানো জাতীয় পরিচয় পত্রের জিডির কপি আপলোড করার সময় ছবিগুলো পরিপূর্ণ আলো এবং সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ডে তুলতে হবে।

নতুন ভোটারদের জন্য আইডি কার্ড বের করার নিয়ম কি?

নতুন ভোটারদের জন্য আইডি কার্ড বের করতে হলে টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদনের ধরন কিভাবে সিলেক্ট করবেন?

জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদনের ধরন রিইস্যু ও বিতরণের ধরন Regular বা Urgent সিলেক্ট করতে হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *